আমরা নারী সব পারি’- উক্তির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বাংলাদেশের অনেক নারী আজ স্বাবলম্বী। নিজের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি অনেকের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখছেন তারা। সাফল্যমণ্ডিত হচ্ছে এসব সংগ্রামী, উদ্যমী নারী উদ্যোক্তার জীবন। তেমনই এক সফল নারী উদ্যোক্তার গল্প শোনাচ্ছেন সাজেদুর আবেদীন শান্ত-
সুলতানা পারভিনের জন্ম সিলেটের জাফলংয়ে। থাকেন সিলেট শহরেই। সিলেটের বেসরকারি মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ সম্পন্ন করেছেন। এরপর ২০১৮ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
স্বামী-সংসার সামলে করোনার এ অবসর সময়কে কাজে লাগিয়ে তিনি এখন কাজ করেন বেতশিল্প নিয়ে। বেতের তৈরি নানা জিনিস অনলাইনে বিক্রি করেন। মাত্র ৬ মাসেই ১৪ লাখ টাকা বিক্রি হয়েছে তার পণ্য।
এ সাফল্যের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘লকডাউনের সময়ে ফেসবুক ভিত্তিক ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হই। সেখানে দেখতে পাই দেশীয় পণ্যের এক বিশাল সমাহার। মূলত এসব কর্মকাণ্ড দেখেই অনলাইনে ব্যবসা করার চিন্তা মাথায় আসে।’
তিনি বলেন, ‘অনেক ভেবে-চিন্তা আমি ঠিক করি, সিলেটের বিখ্যাত বেতশিল্প নিয়ে কাজ করবো। তারপর সিলেটের বেতশিল্পের কারিগরদের সাথে কথা বলে আমার কাজ শুরু করি এবং মাত্র ১ মাসের ভেতরে সাফল্যের দেখা পাই।’
সুলতানা পারভিন বলেন, ‘গত ৬ মাসে আমার মোট পণ্য বিক্রি হয়েছে ১৪ লাখ টাকার উপরে। তবে একটি কথা বলতে চাই, আমার এ সাফল্যের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে উই।’
শুধু করোনার এ অবসর সময়কে কাজে লাগাতেই কি অনলাইন ব্যবসা বেছে নেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘করোনার অবসর সময়কে কাজে লাগানোর জন্য অনলাইনে ব্যবসা করলেও আমি মূলত বেতশিল্পের উন্নয়নের লক্ষ্যে এ কাজ করে যাচ্ছি।’
সুলতানা আরও বলেন, ‘করোনার সময় সিলেটের বেতপল্লির কারিগরদের অবস্থা ছিলো খুবই শোচনীয়। তাদের দোকান
ঘর, বাসা ভাড়াসহ সংসারের খরচ জোগাতে হিমসিম খাচ্ছিল। তাই আমি তাদের কথা মাথায় রেখে তাদের কাছ থেকে নিয়মিত বেতের পণ্য তৈরি করিয়ে নেই।’
সবশেষে তিনি বলেন, ‘আমার পণ্যগুলো অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করে থাকি। এতে কিছুটা হলেও বেত কারিগরদের মুখে হাসি ফোটে। আমি সিলেটের এ বেতশিল্পকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার জন্য কাজ করে যেতে চাই।’
লেখক: শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু কলেজ, ঢাকা।